বয়:সন্ধিকালীন সময়ে কিশোরীদের পালনীয় হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিচর্যা
মুহা: সাইফুল ইসলাম: নারীর স্বাস্থ্য, বিশেষত বয়:সন্ধিকালীন সময় করনীয়,গর্ভকালীন চিকিৎসা, প্রসব সেবা, পরিবার পরিকল্পনা পরামর্শ, শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা, সহিংসতা শিকার নারীর স্বাস্থ্য উন্নয়ন, প্রয়োজনী সরঞ্জমাদী এবং ওষুধ সরবরাহ করা। প্রসূতি মৃত্যু ও হ্রাস ও প্রসব জনিত রোগভোগ থেকে রক্ষা করা। সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। ফলে স্বাধীনতা উত্তর ৪ দশকে বাংলাদেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রশংসনীয় স্তরে উন্নীত হয়েছে।
প্রেক্ষাপট হচ্ছে, একটি শিশু জন্মের পর থেকে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। একটা বয়সে (সাধারনত ৯-১২ বছরের মধ্যে) হঠাৎ তার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়। এ সময় তাকে না ফেলা যায় ছোটদের দলে, না ফেলা যায় বড়দের দলে। এ সময়টাতেই উল্লেখযোগ্য ভাবে শারীরিক কিছু পরিবর্তনের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কিছু মাণসিক পরিবর্তন আসে। শরীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে যৌবনের লক্ষণসমূহ (কন্ঠস্বরের পরিবর্তন, মেয়েদের স্তন বৃদ্ধি ও মাসিক ¯্রাব, স্বপ্নদোষ ইত্যাদি। মানবজীবনের এই কালকেই বলা হয় বয়ঃসন্ধিকাল। মানবজীবনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের সময় বয়ঃসন্ধিকাল। তাই এই সময়টি মানবজীবনের অন্যান্য সময়ের গুরুত্ব থেকে একটু বেশি গুরুত্ব বহন করে। এ সময়ে বেশ কিছু করণীয় আবশ্যিকভাবে পালন করতে হয়। তাহলে পুরোটা জীবন এর সুফল ভোগ করা যায়।
পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া ফেলোশিপ-২০২০ আওতায় গ্রামাঞ্চলে নারীর স্বাস্থ্য ও প্রজনন অধিকার প্রতিবেদনের তথ্যসংগ্রহ করতে গিয়ে এ চিত্র পাওয়া যায়।
দেখা গেছে,বয়ঃসান্ধকাল বয়সের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এ সময়টাতেই বৃদ্ধির চেয়ে আবেগ বেশি কাজ করে। বাস্তবতা সর্ম্পকে অভিজ্ঞতা কম থাকায় অন্যের প্ররোচনায় বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়া পড়া। নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ার আশংকা থাকে। চিন্তা ও কর্মে দুঃসাহসিক কিছু করার প্রবনতা সৃষ্টি হয়। অধিক লজ্জার কারনে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করা হয় প্রজনন স্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ। অন্যান্য রোগ সর্ম্পকে ধারনা থাকে কম। যৌণ আচরনের ফলাফল সর্ম্পকে ধারনা কম থাকে।
স্বাস্থ্য কর্মী মাধ্যমে জানাগেছে,বয়ঃসন্ধিকাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং ঝুকিপূর্ণ। এ সকল ঝুকিঁ হ্রাসের একমাত্র উপায় হচ্ছে, উল্লিখিত বিষয়গুলোতে অভিভাবক ও বন্ধুবান্ধবরে সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা। কিন্তু সেই খোলামেলা আলোচনা কখনো একতরফা ভাবে হবে না। এ ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর কিশোরীদের চেয়ে অভিভাবকের দায়িত্ব অনেক বেশি। অভিভাবকদের এই সময়টাতেই সন্তানদের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরন করতে হবে। সন্তান তার বয়ঃসন্ধিকালের স্বাভাবিক আচরনের ফলে অনেক সময় অনেক কিছু বলতে না চাইলে ও তার সঙ্গে বন্ধত্বভাবাপন্ন হয়ে গল্প ছলে তার মনেভাব জেনে নিতে হবে। এবং তার যদি কোনো সমস্যা পরিলক্ষিত হয় বা তার মাাঝে কোনো ধরনের নেতিবাচক কিছুর প্রভাব বা প্রবনতা দেখা যায়, সেটিকে চিহ্নিত করে তাকে নানা ভাবে ইতিবাচক কথার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে অভিভাবক পরামর্শ করতে পারেন।
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাসটা নিজেকেই তৈরি করতে হয়। এ অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে নিজেকে একটু পরিশ্রম হতে হবে। অভিভাবকদের এ ব্যপারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। পরিবারের অভিভাবকেরা যদি নিজেরই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হন তাহলে তাদের সন্তানরাও তা শিখবে। বয়ঃসন্ধিকালে এই শেখাটাকে একটু গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।
পুষ্টিমূলত একটি প্রক্রিয়া। শরীরে শক্তি দেয়। মগজে বুদ্ধি দেয়। শরীরে বৃদ্ধি ঘটায়। শরীরে সুস্থ রাখে ও রোগে প্রতিরোধ করে। কারন হিসাবে কিশোরী বয়সে মেয়েদের প্রথম পিরিয়ড বা মাসিক। মাসিক সর্ম্পকে জানতে হবে। ঋতু¯্রাব বা পিরিয়ড হলো নারীর জীবনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মেয়েদের যৌবন আগমন থেকে যৌবনের সীমা পযন্ত এই সময়টাই প্রতি ২৮ দিন অন্তর তাদের যৌনী থেকে কিছুটা রক্ত ও শ্লেমা বেরিয়ে আসে। একই বলা হয়ে থাকে মাসিক বা ঋতু। নারীর এই ঋতু¯্রাব হওয়ার সময়কাল হয়ে থাকে ৩-৫ দিন। পর্যন্ত। কিন্তু এর স্বাভাবিক সময়কাল হলো কমপক্ষে ২দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত। একটু বেশি সময় অল্প ল্পর করে রক্ত¯্রাব হওয়া স্বাভাবিক তবে যদি রক্ত প্রবাহ বেশি হয়ে থাকে তাহলে তা অবশ্যই অস্বাভাবিক।
আলাপচারিতায় আরো জানাগেছে, বয়ঃসন্ধিকালের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। কৈশোরকালীন শরীর দ্রæত বাড়ে। এ বৃদ্ধি ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে। যদিও বেড়ে ওঠার এ প্রক্রিয়াটি অনেকটাই বংশগত। তবে এখানে সঠিক পুষ্টির বেশ প্রভাব রয়েছে। কিশোর কিশোরীদের শারীরিক উচ্চতা ও গঠন কেমন হবে এ সময়ের পুষ্টি গ্রহনের ওপর সাধারনত নির্ভর করে। দেহের চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহন করা হলে শরীরের বৃদ্ধি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।
Comments (0)
Facebook Comments (0)